ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট

ভোর ৩টা বাজে মশার কামড়ে বিরক্ত "অ্যাকিলিস ম্যাশাদ" নিজেই কয়েল খোঁজে ব্যর্থ হবার পর মশারি ব্যতীত পাখা ফুল স্পীডে অন করে টিভির সামনে বসে আছে স্কটল্যান্ড এর বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচ উপভোগ করার জন্য।
টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাশ, কিছুটা থমকে গিয়েছিলাম এমন সিদ্ধান্তে তারপরও গুরু বলে কথা।
.
স্কটিশ ওপেনার ক্যালাম ম্যাকলিওড-কে নিজের ২য় ও ইনিংসের ৩য় ওভারে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান কাপ্তান ম্যাশ।
তাসকিন দলীয় ১০ম ওভারে হ্যামিশ গার্ডিনার-কে আউট করলে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ দাড়ায় ২ উইকেটে ৩৮ রান, অপর প্রান্তে ছিলেন আরেক ওপেনার কাইল কোয়েতজার।
.
ম্যাট মচন-কে সংগে নিয়ে ফাইট ব্যাক দেওয়া শুরু করেন কোয়েতজার, এ জুটি ৮৫ বলে ৭৮ রান যোগ করলে স্কটিশরা খেলায় ফিরে। ৫০ বলে ৩৫ রান করা ম্যাট মচন-কে ফিরিয়ে এ জুটির সমাপ্তি ঘটায় সাব্বির রুম্মান।
প্রিস্টন মমসেন পরবর্তী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে আসেন, তাঁকে নিয়ে কোয়েতজার রীতিমতো তান্ডব চালায় টাইগার্সদের বোলিং লাইন আপে।
.
মমসেন-কোয়েতজার জুটি ১১৩ বলে ১৪১ রান করে, জুটি ভাঙ্গার পূর্বে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোয়েতজার এবং বনে যান ১ম স্কটিশ ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে শতক হাকানোর রেকর্ডদ্বারী।
নাসির হোসেন ৭ম বোলার হিসেবে এই জুটির সমাপ্তিসহ তুলে নেন দু'জনকে।
১৭টি চার ও ৪টি ছয়ে কোয়েতজার থামেন ১৫৬ রানে, তখন স্কটিশদের সংগ্রহ ৪৫তম ওভারে ৫ উইকেটে ২৬৯ রান।
.
শেষের দিকে রিচি বেরিংটন ও ম্যাথু ক্রস এই দু'জনের দুই ক্যামিও-তে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান সংগ্রহ করে স্কটিশরা।
তিন শতাধিক রান তাড়া করতে নামার পূর্বে টাইগার্সরা একটি ধাক্কা খায়, ফিল্ডিং এ ক্যাচ ধরার সময় ওপেনার এনামুল হক বিজয় কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন এবং এ কারণে তামিম ইকবালের সাথে ঐদিন ওপেনিং জুটিতে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য সরকার।
.
মাত্র ৫ রানে ওপেনিং জুটির সমাপ্তি ঘটে সৌম্যের ২ রানে আউট হওয়ার মাধ্যমে তবে ৩য় ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ্ রিয়াদ-কে নিয়ে তামিম গড়েন শতাধিক রানের জুটি।
৬টি চার ও ১টি ছয়ে ৬২ রানে আউট রিয়াদ ভাউ আউট হলে এ জুটির সমাপ্তি হয় ১৩০ বলে ১৩৮ রানে।
.
ভাউ আউট হলে ক্রিজে আসেন ছোট প্যাকেট বোম্ব উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
তামিম-মুশি জুটিতে টাইগার সমর্থকরা স্বপ্নে বিভোর ছিল ১ম বাংলাদেশীর বিশ্বকাপ শতকটি তামিমের ব্যাটে আসবে।
.
কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি জোশ ডেভি, ৯টি চার ও ১টি ছয়ে ব্যক্তিগত ৯৫ রানে তামিমকে আউট করে ৫৭ রানের জুটি ভাঙ্গার পর মাঠে আসেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
.
৬ চার ও ২টি ছয়ে ৬০ রানে মুশি আউট হলে সাকিব-মুশি জুটির অবসান ঘটে ৪৬ রানে।
মুশি আউট হবার পর মাঠে আসেন সাব্বির রুম্মান।
রুম্মান-সাকিব এর অনবদ্য ৭৫ রানের জুটিতে ৪১ বলে ৫ টি চার ও ১টি ছয়ে অপরাজিত ৫২ রান করেন সাকিব এবং ৪০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে অপরাজিত ৪১ রান করেন রুম্মান।
.
আর কোন অঘটন না ঘটিয়ে রুম্মান-সাকিব জুটি ১১ বল হাতে রেখে টাইগার্সদের ৬ উইকেটে জয় এনে দেয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর 
স্কটল্যান্ডঃ ৩১৮/৮(৫০)
কাইল কোয়েতজার ১৫৬ (১৩৪) {১৭×৪, ৪×৬}
প্রিস্টন মমসেন ৩৯ (৩৮) {২×৪, ১×৬}
ম্যাট মচন ৩৫ (৫০) {২×৪, ১×৬}
তাসকিন ৩/৪৩(৭)
নাসির ২/৩২(৫)
সাকিব ১/৪৬(১০)
++++++++++++++++++++++
বাংলাদেশঃ ৩২২/৪(৪৮.১)
তামিম ৯৫ (১০০) {৯×৪, ১×৬}
রিয়াদ ৬২ (৬২) {৬×৪, ১×৬}
মুশফিক ৬০ (৪২) {৬×৪, ২×৬}
সাকিব ৫২* (৪০) {৫×৪, ১×৬}
সাব্বির ৪২* (৪০) {৪×৪, ২×৬}
জশ ডেভি ২/৬৮(১০)
অ্যালাসডেয়ার ইভান্স ১/৬৭(১০)
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অফ দ্য ম্যাচঃ কাইল কোয়েতজার।

No comments

Powered by Blogger.